অকুমার পাত্রের কুমারী পাত্রী বিবাহ
এটি একটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সত্যি ঘটনা যার মূল চরিত্র হাফিজ শিক্ষিত তবে আত্মস্বীকৃত চরিত্রহীন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করে চট্টগ্রামেরই একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে ভাল বেতনে চাকরি করে। তার চরিত্রগত কারণে বিয়ে-শাদী নাকি না করলেও চলে, তবে পরিবারের চাপাচাপিতে বিয়ে করার জন্যে মেয়ে খুঁজতে লাগলো। হাফিজ নিজের স্বভাবের সাথে তুলনা করে দুনিয়ার সব মেয়েকে খারাপ ভাবে, তাই মেয়ে পছন্দ হয় না। শেষে সিদ্ধান্ত নিলো, অল্প বয়সী মেয়ে বিয়ে করবে, যাতে প্রকৃত অর্থেই কুমারী মেয়ে বিয়ে করতে পারে। আমি ইয়ার্কি করে তাকে সত্যি কথাটা বলতাম- আপনি যত মেয়ের কুমারীত্ব নষ্ট করেছেন বলে দাবি করেন, সবাই এরকম করলে দেশে আর কুমারী মেয়ে থাকে কি করে? যাই হোক, একবার চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরার পথে হাফিজের সাথে ট্রেনে একটি পরিবারের দেখা হলো যাদের একটি মেয়ে ক্লাশ টেনে পড়ে এবং তাকে বিয়ে দেয়ার জন্যে তারা মালদার পাত্র খুঁজছে। হাফিজের সাথে তো ব্যাটে বলে মিলে গেল। মেয়ে মাত্রাতিরিক্ত সুন্দরী। যাতে অন্য কোথাও বিয়ে না হয়ে যায় হাফিজ নিজের বয়সের আড়াই ভাগের এক ভাগ বয়সী মেয়ের সাথে এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ের কাজ সারলো। বিয়েতে প্রচুর খরচও করলো। গহনা-গাটির একদম বাড় বাড়ন্ত। মেয়ের পরিবার খুবই খুশি, তবে মেয়েকে খুশি মনে হলো না। কয়েকদিন পরেই শোনা গেল মেয়ের নাকি বুড়ো বর পছন্দ হয়নি। বাবা-মার চাপাচাপিতে বিয়েতে রাজি হয়েছে। হাফিজ কিন্তু বৌকে খুশি করতে যা সম্ভব সব করতে লাগলো। এমনকি যে হাফিজ সারাজীবন নিজের বাবা-মাকে আব্বা আর মা ডেকে এসেছে, সে শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে ডাকতে লাগলো আব্বু আর আম্মু।
হাফিজের বৌয়ের নাম জলি। জলি সবসময় বলতো, তার নাকি বিয়ের আগে যার সাথে সম্পর্ক ছিল তার সাথে যে করে হোক একদিন পালিয়ে যাবেই। পাগলের প্রলাপ মনে করে হাফিজ এসব কথাকে কখনোই পাত্তা দিত না। জলিকে নিয়ে হাফিজ চট্টগ্রামে বাসা ভাড়া নিল। কিছুদিন পরে জলি গর্ভবতী হলো। তারও কিছুদিন পরে একদিন বিকেলে জলি উধাও। ফিরে এলো রাত সাড়ে এগারোটায়। নিজে নিজে গিয়ে এমআর (বাচ্চা নষ্ট) করে এসেছে। হাফিজ জলির মন রক্ষার্থে তেমন কিছুই বলল না। আরও কিছুদিন পরে জলি আবারও উধাও। এবার আর রাত সাড়ে এগারোটায়ও ফিরে এলো না। এমনকি এখন ঘটনার এক মাস এখনও ফিরে এলোনা। জলি না এলেও কিছু কিছু উড়ো খবর আমাদের কানে আসতে লাগলো। তা হলো জলির সেই প্রেমিকের সাথে তার গতবছর বিয়ে হয়েছিল, নিজেরা পালিয়ে গিয়ে। একসাথে সংসারও করেছিল মাসখানেক। জলির বাবা তখন মেয়েকে সেখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে এবং ছেলেকে মারধর করে। ছেলেপক্ষও তখন ক্ষেপে যায় এবং জলির বাবাকে স্ট্যাম্পে সই করায় যে এরপর কখনো মেয়ে চলে আসলে ছেলেপক্ষ দায়ী থাকবে না। তবে সেই ছেলের পরিবার জিদের বশবর্তী হয়ে সবসময় চেষ্টা করতো কি করে জলিকে নিয়ে আসা যায়। বাবার ঘর থেকে পারেনি, তবে স্বামীর ঘর থেকে ঠিকই বের করে নিয়েছে। জলি নাকি এখন সেই ছেলের সাথেই আছে। তবে কোথায় আছে কেউ বলতে পারছেনা।
0 comments
Post a Comment